পিরিয়ডের সময় করনীয় কি?
মেয়েদের মুলত কষ্ট যা 🥺
পিরিয়ডের সময় যদি আপনার অসহ্য রকম পেট ব্যাথা বিশেষ করে তলপেটে, পিঠের নিচের দিকে হালকা ব্যাথা, পায়ের নিচের দিকে ব্যাথা হয়ে থাকে তবে এই পোস্ট টি আপনার জন্য।
উপরের যে উপসর্গগুলোর কথা বললাম, এই উপসর্গে ভোগে না এমন মেয়ে আমাদের আশে পাশে খুব কম আছে। এই ধরনের ব্যাথাকে আমরা সবসময় নর্মাল মনে করে থাকি। বা আমাদের মা,দাদী নানীরা বলে থাকেন এমন এই সময়ে হয়ে থাকে। তবে আসলেই কি তাই?? আজ আমরা এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজবো।
পিরিয়ডের সময়ে এই ধরনের উপসর্গকে বলা হয় ডিসমেনোরিয়া। ডিসমেনোরিয়া পিরিয়ড রিলেটেড ডিজঅর্ডার গুলোর একটি।
ডিসমেনোরিয়া মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে-
১) প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া
২) সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া
প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া: প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া মূলত পিরিয়ড যখন শুরু হয় তখন থেকে শুরু করে পিরিয়ড যতদিন চলে ততদিনই হয়ে থাকে। প্রত্যেক বার যখন পিরিয়ড হয় তখনই এই ধরনের ব্যাথা অনুভব হবে। এটা স্বাভাবিক। যে কারো ই প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া হতে পারে। এই ব্যাথা পিরিয়ড শুরু হবার ২/৩ দিন আগে থেকে শুরু করে পিরিয়ড এর ২/৩ দিন পর্যন্ত থাকে। তবে এই ব্যাথার তীব্রতা তুলনামূলক ভাবে কম হয়।
সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া: পিরিয়ডের সময়ের তীব্র ব্যাথা যদি কিছু নির্দিষ্ট মেডিকেল কন্ডিশন এর জন্য হলে তখন সেটাকে সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া বলা হয়। এই মেডিকেল কন্ডিশন গুলির মধ্যে সব থেকে কমন যেটা সেটা হচ্ছে-
√পিসিওএস বা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম
এছাড়াও-
√ পেলভিক ইনফ্লামেটরি ডিজিজ
√ইউটেরাইন ফাইব্রয়েডস (জরায়ুতে ফাইব্রয়েডস থাকা)
√অস্বাভাবিক প্রেগন্যান্সি( মিসক্যারেজ/ একটোপিক প্রেগন্যান্সি)
√ এন্ডোমেট্রিওসিস বা এডেনোমায়োসিস হলেও সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া হয়ে থাকে।
পিরিয়ডের সময় ব্যাথা ছাড়াও ডিসমেনোরিয়ার আরও কিছু উপসর্গ রয়েছে যেমন-
১) মাথা ঘুরানো
২)বমি বমি ভাব
৩)ডায়রিয়া
৪)দূর্বল লাগা
৫) অনেক ক্ষেত্রে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
৬)মাথা ব্যাথা
অনেক ক্ষেত্রে এই সব সমস্যাগুলোকে আমার পিরিয়ডের সময় নর্মাল বলে ধরে নেই। তবে যদি পর পর কয়েকমাস পিরিয়ডের সময় ব্যাথা হবার সাথে সাথে আপনার এই সমস্যাগুলো দেখা যায় তবে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিৎ।
এবার আসা যাক কিভাবে শনাক্ত করবেন আপনার কি প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া নাকি সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া?
পেটে অসহনীয় ব্যাথা হবার সাথে সাথে
-যদি আপনার হেভি ব্লিডিং হয়।
- ক্লটেড ব্লাড আসে, অর্থাৎ পিরিয়ডের ব্লাড যদি জমাট বাধা অবস্থায় আসে।
-যদি কালার অনেক কালচে বা ফ্যাকাসে থাকে
- পিরিয়ডের ব্লাড একদমই কম আসা বা স্পটিং হওয়া
আর সাথে ডিসমেনোরিয়ার অন্যান্য সিম্পটমস থাকা।
এইযে ভীষণ রকম ব্যাথা, এত সমস্যা এটা কি সলভ করা সম্ভব??
হ্যা সম্ভব। প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া দুটোই সলভ করা সম্ভব।
পরবর্তী পোস্টে ডিসমেনোরিয়ার মেডিকেল ডায়াগনোসিস এবং এই তীব্র ব্যাথা কিভাবে কমাতে পারবেন সেই ব্যাপারে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।
source :সো্মাইয়া শিলা
চাইল্ড এন্ড রিপ্রোডাক্টিভ নিউট্রিশন কনসালট্যান্ট
বিএস, পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
No comments